রাসেল ভাইপার সাপ সর্ম্পকে জানুন
প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা রাসেল ভাইপার নিয়ে কিছু তথ্য শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।আপনি যদি রাসেল ভাইপার নিয়ে জানতে চান? তাহলে পুরো ব্লগটি মন দিয়ে পড়ুন। রাসেল ভাইপার, যা বাংলাদেশে চন্দ্রবোড়া নামেও পরিচিত, ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম বিষধর সাপ এটি। রাসেল ভাইপার ভাইপারিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এবং
Daboia russelii বৈজ্ঞানিক নামে পরিচিত।
বৈশিষ্ট্য:
আকার: প্রাপ্তবয়স্ক রাসেল ভাইপার সাধারণত ১.২ মিটার (৪ ফুট) দৈর্ঘ্যে পৌঁছায়, তবে কিছু নমুনা ১.৬ মিটার (৫.২ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
রঙ: এর শরীর বাদামী, লালচে বাদামী বা ধূসর রঙের হয়, যার উপর কালো, বাদামী বা লালচে বাদামী দাগ থাকে।
মাথা: মাথা ত্রিভুজাকৃতির এবং স্পষ্টভাবে গলা থেকে আলাদা।
চোখ: চোখ বড় এবং উজ্জ্বল, পुतলী উলম্ব।
লেজ: লেজ ছোট এবং স্পষ্টভাবে শরীর থেকে আলাদা।
বিস্তরণ:
রাসেল ভাইপার ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ায় পাওয়া যায়। এটি বিভিন্ন ধরণের বাসস্থানে বাস করে, যার মধ্যে রয়েছে বন, তৃণভূমি, কৃষি জমি এবং এমনকি শহরাঞ্চল।
আচরণ:
রাসেল ভাইপার স্থলচর এবং নিশাচর। দিনের বেলায় এরা সাধারণত গর্ত, পাথরের নিচে বা গাছপালায় লুকিয়ে থাকে। রাতে তারা শিকারের সন্ধানে বের হয়।
বিষ:রাসেল ভাইপারের বিষ হিমোটক্সিন এবং নিউরোটক্সিনের মিশ্রণ। এটির কামড় বেদনাদায়ক এবং ফোলাভাব, রক্তক্ষরণ এবং অভ্যন্তরীণ রক্তপাত সৃষ্টি করতে পারে। চিকিৎসা না করা হলে, কামড় মারাত্মক হতে পারে।
রাসেল ভাইপার বাংলাদেশে সর্বাধিক বিষধর সাপের কামড়ের জন্য দায়ী। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে অনেকেই মারা যায়।
প্রতিরোধ:
রাসেল ভাইপারের কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য সাবধানতা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ। রাতের বেলায় বাইরে বের হওয়ার সময় লম্বা পোশাক পরা এবং সাবধানে হাঁটা উচিত। সাপ দেখা গেলে তাকে বিরক্ত করা উচিত নয়।
চিকিৎসা:
রাসেল ভাইপারের কামড়ে আক্রান্ত হলে তৎক্ষণই চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাথমিক চিকিৎসা:
আক্রান্ত অংশটি হৃৎপিণ্ডের সমান উচ্চতায় বা তার চেয়ে নিচুতে রাখুন।
কামড়ানো স্থানে কোন ব্যান্ডেজ বা টাইট ফিটিং পোশাক ব্যবহার করবেন না।
আক্রান্ত ব্যক্তিকে শান্ত রাখুন এবং তাকে যতটা সম্ভব কম নড়াচড়া করতে
বলুন।
দ্রুততম সময়ে একজন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
অ্যান্টিভেনম:
রাসেল ভাইপারের কামড়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যান্টিভেনম রয়েছে যা হাসপাতালে পাওয়া যায়। দ্রুত চিকিৎসা না করা হলে, অ্যান্টিভেনম কার্যকর নাও হতে পারে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
- রাসেল ভাইপার সাপকে মারা উচিত নয় কারণ এটি আইনিভাবে সুরক্ষিত এবং পরিবেশের
ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- স্থানীয় ওষুধ বা কবিরাজের চিকিৎসার উপর নির্ভর না করে আধুনিক চিকিৎসা গ্রহণ
করা উচিত।
- রাসেল ভাইপার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সাবধানতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের
মাধ্যমে এই সাপের কামড়ে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব।
শেষকথা,
রাসেল ভাইপার বাংলাদেশের একটি বিষধর সাপ যা মানুষের জন্য মারাত্মক হতে পারে। সাবধানতা অবলম্বন এবং দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে এই সাপের কামড়ের ঝুঁকি এবং মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব।
তথ্যসূত্র: অনলাইন
Disclaimer: We do not guarantee that the information of this page is 100% accurate and up to date.